SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

এসএসসি(ভোকেশনাল) - ফ্রুট এন্ড ভেজিটেবল কাল্টিভেশন-২ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

প্রাসঙ্গিক তথ্য 

কাঁঠাল বহু বর্ষজীবী দ্বিবীজপত্রী বৃক্ষ। স্ত্রী ফুল ও পুরুষ ফুল একই গাছে পৃথকভাবে ধরে। কাঁঠাল পরপরাগায়িত ফসল, বংশবিস্তার সাধারণত বীজ দ্বারা হয়ে থাকে। প্রত্যেকটি গাছই একটি আলাদা জাত। টব বা পলিথিন ব্যাগে বীজ বপন করে তা থেকে আঙ্কুরিত চারার বয়স ১-২ বছর হলে রোপণের জন্য ব্যবহার করা হয় । জাতের বিশুদ্ধতা রক্ষা ও ভালো জাত সম্পন্ন ফল পেতে হলে ৮-১০ দিন বয়ক চারার ভালো কোন জাতের অঙ্কুর জোড় করে চারা উৎপাদন করা যায়।

উপকরণ 

(১) বীজ/কাটিং (২) সার (জৈব ও রাসায়নিক) (৩) কীটনাশক (৪) ছত্রাকনাশক (৫) স্প্রে যন্ত্র (৬) পানি ( ৭ ) লাঙল (৮) জোয়াল (৯) মই (১০) মুগুর (১১) খুরপি (১২) পলিথিন ফিতা (১৩) সিকেচার (১৪) ঝুড়ি (১৫) খুঁটি (১৬) রশি (১৭) করাত (১৮) খাঁচা (১৯) টিন (২০) ঝাঝরি (২১) বালি (২২) বাশ (২৩) সিরিঞ্জ (২৪) তুলা (২৫) আলকাতরা/কেরোসিন (২৬) কোদাল ।

কাজের ধাপ 

১। কাঁঠালের উন্নত জাত নির্বাচন করুন। প্রয়োজনীয় চারা (৩৫টি/একরে) সংগ্রহ করুন। 

২। কাঁঠাল চাষের জন্য উঁচু স্থান এবং উর্বর সুনিষকাশিত গভীর পেঁআশ এঁটেল দোআশ মাটি নির্বাচন করুন । 

৩ । উন্নত জাতের গাছ থেকে ভিনিয়ার কলম করে চারা তৈরি করুন । 

৪ । কাঁঠালের জমি ভালভাবে লাঙল দিয়ে ৪/৫টি চাষ ও মই দিন । মুগুর দিয়ে ঢেলা ভেঙে দিন । আগাছা হাতে বেছে সমতল করুন । 

৫ । জমিতে গর্ত খননের জন্য (কাঁঠালের কলমের চারা ৩৫) ১২ মি: দুরত্বে কোদাল দিয়ে ১x১ মি. গভীরী চওড়া মাপের ৫টি গর্ত তৈরি করুন । গর্ভ সপ্তাহকাল খোলা অবস্থায় রেখে দিন। এরপর গর্তের মাটির সাথে জৈব সার বা গোবর ২৫ কেজি এবং ৩০০ গ্রাম টিএসপি মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে দিন । গা ভরাট করার সময় উপরের মাটি নিচে এবং নিচের মাটি উপরে দিন এবং ১০/১৫ দিনপর বিকালের দিকে চারা লাগান । 

৬। চারা রোপণের জন্য টব থেকে চারা বের করে (আম দ্রষ্টব্য) নিন । চারা গর্তে বসিয়ে চারদিকে হাতে মাটি চেপে দিন । খুঁটি পুতে রশি দিয়ে চারা শক্ত করে বেঁধে দিন। রোপণের পরপর ঝাঝরি দিয়ে পানি দিন। ৫-৬ দিন সেচ ও ছায়া দিন । প্রতিটি চারাগাছ খাঁচা দিয়ে ঘিরে শক্ত করে খুঁটিসহ খাঁচা বেধে দিন ।

৭। চারা গাছের গোড়ায় আগাছা জন্মালে নিড়িয়ে তুলে দিন। মাটি আলগা করুন। সেচের পর জমিতে জো এলে চেপে থাকা মাটি ভেঙে আলগা করে দিন । বয়স্ক গাছে বর্ষার আগে ও পরে গোড়ার মাটি কোদাল দিয়ে লাঙল দিয়ে আলগা করে দিন এবং সব সময় আগাছামুক্ত করে রাখুন । 

৮। কাঁঠাল গাছে সার দুই দফায় বর্ষার পরে ও আগে উপরি প্রয়োগ করুন । 

৯ । চারা রোপণের পরে গাছ প্রতি ১০ কেজি জৈব সার, ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৩০০ গ্রাম টিএসপি ও ৩০০ গ্রাম এমপি সার প্রয়োগ করুন। দশ বছর বয়স্ক গাছে ৮০ কেজি জৈব সার, ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ১.৫ কেজি ও এমপি১.৫ কেজি প্রয়োগ করুন। এসব সার দুই দফায় (৮নং এ বর্ণিত নিয়মে) প্রয়োগ করুন । 

১০। গাছের গোড়ার চারদিকের কিছু জায়গা প্রকার ভেদে ৩০-১০০ সে.মি বাদ রেখে দুপুরে যতটুকু স্থানে ছায়া পড়ে সে অংশের মাটি কোদাল বা লাঙল দিয়ে আলগা করে সার প্রয়োগ করে মাটিতে মিশিয়ে দিন ।

১১ । সার প্রয়োগের পর গাছে থালা পদ্ধতিতে সেচ দিন । চারা গাছে বর্ষাকাল বাদে প্রয়োজনে ৭-১০ দিন পর পর এবং বয়স্ক গাছে ১৫-২০ দিন পর পর সেচ দিন। 

১২। কাঁঠাল গঠনের জন্য বয়স্ক কাঁঠাল গাছের গোড়ায় ৪-৫ মি. এর মধ্যে ডালপালা গজালে ছেটে ফেলুন । মরা রোগাক্রান্ত ডালপালা ছেটে দিন। বয়স্ক গাছে ফল সংগ্রহের পর কাণ্ডে গজানো ছোট শাখা ও ফলের বোটার অবশিষ্টাংশ ঘেঁটে দিন । 

১৩ । কুঁড়ির কীড়া ও ফলের মাজরা পোকা দমনের জন্য প্রতি ১০ লি. পানিতে ৪-৫ চা চামচ ডায়াজিনন-৬০ তরল কীটনাশন গুলে ফল, কুঁড়ি ও পাতায় ভালোভাবে স্প্রে করুন । 

১৪ । কাণ্ডের মাজরা পোকা দমনের জন্য--(১) চিকন বক্র তার ঢুকিয়ে কীড়া বের করে এনে মেরে ফেলুন (২) গর্তে সিরিঞ্জ দিয়ে কেরোসিন/ আলকাতরা ঢুকিয়ে (১ সিসি) দিন, (৩) আলকাতরা ভেজানো তুলা বা কাদা দিয়ে গর্তের মুখ বন্ধ করে দিন । 

১৫। পাতায় দাগ পড়া ও পঁচা রোগের আক্রমণে প্রতি ১০লি, পানিতে ৪০-৫০ গ্রাম ডাইথেন-এম-৪৫ পাউডার গুলে পক্ষকাল পরপর পাতা, মুচি, ফল এবং ডগায় স্প্রে করুন । 

১৬ । গাছে ফুল আসার ৫-৬ মাস পর ফল সংগ্রহ করতে পারেন। পরিপুষ্ট ফল সাবধানে পেড়ে এনে খারাপ ভাল বাছাই করে নিন । দূরে চালান দিতে হলে একটু শক্ত কাঁঠাল পেড়ে পাঠান । 

সতর্কতা

১। কাঁঠাল গাছ জলাবদ্ধতা মোটেই সহ্য করতে পারে না। তাই নিকাশের ভাল ব্যবস্থা রাখতে হবে। এবারে কাজের ধাপ অনুসরণ করে ব্যবহারিক খাতায় লিখুন ।

Content added By

Promotion